Total: 750.00৳ 
Total: 750.00৳ 

সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) – Siratur Rasul (sm) [Nobider Kahini 3]

750.00৳ 

Description

১৩ জন নবীর জীবনী নিয়ে ১ম খন্ড:
১১ জন নবীর জীবনী নিয়ে ২য় খন্ড:
শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর জীবনী নিয়ে ৩য় খন্ড:

সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) বা নবীজীবনী পড়তে শুরু করার আগে সম্মানিত পাঠককে নিম্নোক্ত বিষয়গুলির ব্যাপারে সজাগ থাকতে বলব।-

(১) এটি সাধারণ কোন মানুষের জীবনী নয়। বরং পৃথিবীতে মানব বসতির সূচনাকাল হ’তে প্রলয়কাল পর্যন্ত বিশ্বমানবতার শ্রেষ্ঠ সন্তানের পবিত্র জীবনী আমি পাঠ করতে যাচ্ছি। অতএব পূর্ণ শ্রদ্ধার সাথে তাঁকে গ্রহণ ও বরণ করে নেওয়ার জন্য নিজের মনকে শুরুতে প্রস্ত্তত করে নিতে হবে।

(২) এটি এমন এক মানুষের জীবনী, যিনি জগদ্বাসীর কল্যাণে সরাসরি আল্লাহর নিকট থেকে শাশ্বত ও পূর্ণাঙ্গ হেদায়াত লাভ করেছেন। যেখানে সম্মুখ বা পিছন থেকে কোনরূপ মিথ্যার প্রবেশাধিকার নেই।

(৩) যিনি পিতা-মাতার মাধ্যমে দুনিয়াতে এসেছেন এবং আমাদেরই মত রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। সুখ-দুঃখের মধ্যে তাঁর জীবন কেটেছে এবং তিনি ছিলেন সর্বদা সাধারণ মানুষের আনন্দ ও বেদনার সাথী।

(৪) তিনি ছিলেন আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল। ‘তাঁর পরে আর কোন নবী নেই’ (বুঃ মুঃ)। তাঁর আগমনের পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত সকল জিন ও ইনসান তাঁর উম্মত। তাঁর আনীত কুরআন ও ইসলামের মাধ্যমে বিগত সকল ইলাহী কিতাব ও শরী‘আত মানসূখ বা হুকুম রহিত হয়ে গেছে। তাঁর আনীত দ্বীনকে যে অস্বীকার বা অমান্য করবে, সে জাহান্নামী হবে (মুসলিম)।

(৫) আল্লাহর অহী ব্যতীত তিনি কোন কথা বলতেন না (নাজম ৫৩/৩-৪)। তিনি যা বলেছেন তা করণীয় এবং যা নিষেধ করেছেন, তা বর্জনীয় (হাশর ৫৯/৭)। তিনি ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী (ক্বলম ৬৮/৪) এবং ঈমানদারগণের জন্য সর্বকালের সর্বোত্তম আদর্শ (আহযাব ৩৩/২১)।

অতএব প্রিয় পাঠকের নিয়তকে আল্লাহর জন্য খালেছ করে নিতে হবে যে, জীবনের সকল ক্ষেত্রে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথ অনুসরণ করব এবং এর সাথে অন্য কাউকে শরীক করব না। ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের সকল দিক ও বিভাগে আমি কেবল আল্লাহর দাসত্ব করব এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কাজ করব। আমি আল্লাহর বিধানের চাইতে মানুষের মনগড়া বিধানকে উত্তম বা সমান বা অনুসরণযোগ্য মনে করব না। কেননা তাতে মুমিনের সকল আমলই বরবাদ হবে। পরকালে তা কোনই কাজে আসবে না (ফুরক্বান ২৫/২৩)।

অতএব সবার আগে চাই খালেছ নিয়ত (যুমার ৩৯/২; বুখারী হা/১)। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ اللهَ لاَ يَقْبَلُ مِنَ الْعَمَلِ إِلاَّ مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا وَابْتُغِىَ بِهِ وَجْهُهُ ‘নিশ্চয় আল্লাহ কেবল ঐ আমলই কবুল করেন, যা তাঁর জন্য খালেছ হয় এবং যার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়’।[1]

অতএব যারা নবীজীবনী পাঠ করবেন, তারা পরকালীন জীবনে মুক্তির লক্ষ্যে ইহকালীন জীবনে পাথেয় হাছিলের উদ্দেশ্যে তা পাঠ করবেন, এটাই সকলের নিকট আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা।

গৃহীত নীতি (منهجنا فى الكتاب) :

সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) রচনার ক্ষেত্রে আমরা প্রথম ও প্রধান উৎস হিসাবে গ্রহণ করেছি পবিত্র কুরআনকে। কেননা হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنُ ‘কুরআনই ছিল রাসূলচরিত’।[2] অতঃপর ছহীহ হাদীছকে। অতঃপর বিষয়বস্ত্তর পূর্ণতার জন্য ‘হাসান’ বা তার নিকটবর্তী স্তরের হাদীছকে। আক্বীদা কিংবা বিধানগত বিষয়ে কোন যঈফ হাদীছ গ্রহণ করা হয়নি। এর বাইরে বৈষয়িক বা উন্নত চরিত্রগত বিষয় বা অনুরূপ কাছাকাছি কোন বিষয়ে যখন শক্তিশালী কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি, তখন অতি প্রসিদ্ধ এবং অধিকাংশ বিশ্বস্ত জীবনীকার কর্তৃক গৃহীত ও বিশুদ্ধতার কাছাকাছি এমন দুর্বল বর্ণনাগুলি আমরা গ্রহণ করেছি। যার সংখ্যা অতি নগণ্য। সাথে সাথে সেগুলি আমরা টীকাতে উল্লেখ করে দিয়েছি।

স্মর্তব্য যে, ‘প্রসিদ্ধ হ’লেই সেটা বিশুদ্ধ হবে, এমনটি আবশ্যিক নয়’ (আলবানী)। তবে ‘এর দ্বারা ঘটনাটি আদৌ ঘটেনি, এমনটিও বুঝানো হয় না। বরং বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত নয়, সেটাই বুঝানো হয়ে থাকে’ (আকরাম যিয়া)।[3]

আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর একটি বিশুদ্ধ জীবনীগ্রন্থ বাংলাভাষী পাঠকদের উপহার দেওয়ার জন্য। খ্যাতনামা তাবেঈ আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (১১৮-১৮১ হি.) কতইনা সুন্দর বলেছেন, في صحيح الحديث غُنْيةٌ عن سقيمه ‘ছহীহ হাদীছই যথেষ্ট যঈফ হাদীছ থেকে’ (মা শা-‘আ, ভূমিকা)। একইভাবে একটি ছহীহ সীরাত গ্রন্থ যথেষ্ট হবে যঈফ সীরাত গ্রন্থের চাইতে, যদিও তা সংক্ষিপ্ত হয়। যাতে ক্বিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে আমাদের কৈফিয়তের সম্মুখীন হ’তে না হয় যে, আমি যা বলিনি বা করিনি এবং আমি যা ছিলাম না, সেভাবে তোমরা কেন আমাকে পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করেছিলে? অতএব হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে যথার্থভাবে তোমার নবীজীবনকে তুলে ধরার তাওফীক দাও এবং এ ব্যাপারে অনিচ্ছাকৃত কোন ভুল হলে আমাদের ক্ষমা কর- আমীন!

উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নামের শেষে ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহে ওয়া সাল্লাম, সংক্ষেপে (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরামের নামের শেষে রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু বা ‘আনহা বা ‘আনহুম সংক্ষেপে (রাঃ) এবং তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ বা অন্যান্য মরহূম বিদ্বানগণের নামের শেষে ‘রাহেমাহুল্লাহ’ সংক্ষেপে (রহঃ) লেখা হয়েছে। আবু মুহাম্মাদ তামীমী (রহঃ) বলেন, ما لكم تأخذون العلم عنا وتستفيدونه منا ثم لا تترحمون علينا؟ ‘তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আমাদের কাছ থেকে ইলম শিখবে ও আমাদের থেকে ফায়েদা হাছিল করবে, অথচ আমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ নাযিলের দো‘আ করবে না?’ (মা শা-‘আ, ভূমিকা)। সেই সাথে আমরাও বলব, যারা এই গ্রন্থ থেকে নিয়ে নিজেরা গ্রন্থ রচনা করবেন, তারা অন্তত অত্র গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের স্বীকৃতিটুকু দিবেন। যেটার এযুগে বড়ই অভাব। তাহ’লে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নেকী তারা পাবেন। সাথে সাথে তাদের দো‘আ পরকালে এ নাচীয গ্রন্থকারের জন্য উপকারী হবে।

বিদ্বানগণ বলেন, من الفكر الى الفكر سبيل ‘এক চিন্তা থেকে আরেক চিন্তার রাস্তা খুলে যায়’। সেমতে এই গ্রন্থ রচনায় আমরা শুরুতে সাহায্য নিয়েছিলাম উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ জীবনীকার সুলায়মান বিন সালমান মানছূরপুরীর ‘রহমাতুল্লিল ‘আলামীন’ (উর্দূ ৩ খন্ডে ১০৯২ পৃ.) থেকে এবং শায়খ ছফিউর রহমান মুবারকপুরীর ‘আর-রাহীকুল মাখতূম’ গ্রন্থ থেকে। পরবর্তীতে সাহায্য নিয়েছি ইরাকের ড. আকরাম যিয়া উমারীর ‘সীরাহ নববিইয়াহ ছহীহাহ’ (২ খন্ডে ৭২২ পৃ.) থেকে। সেই সাথে তাহকীকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী সাহায্য পেয়েছি রিয়াদের মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আল-ঊশান-এর গ্রন্থ থেকে। এছাড়াও সাহায্য নিয়েছি হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ)-এর যাদুল মা‘আদ(তাহকীক -আরনাঊত্ব) ও শায়খ আলবানী (রহঃ)-এর কিতাবসমূহ থেকে এবং তাহকীক ইবনু হিশাম ও তা‘লীক্ব আর-রাহীকুল মাখতূম থেকে। আর মাওলানা আকরম খাঁ-র ‘মোস্তফা চরিত’ থেকে। আমরা তাঁদের সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং নবী চরিতের বিশুদ্ধতার জন্য তাঁরা যে অমূল্য খিদমত জাতিকে উপহার দিয়ে গেছেন, তার জন্য আল্লাহর নিকট তাঁদের জন্য উত্তম জাযা প্রার্থনা করছি।

সর্বোপরি ইসলামী গবেষকদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম সেরা উপহার ‘আল-মাকতাবাতুশ শামেলাহ’-এর উদ্যোক্তা ভাইদের জন্য প্রাণখোলা দো‘আ করছি। যে সফটওয়্যারের সাহায্য না পেলে এরূপ বিশুদ্ধ জীবনী গ্রন্থ উপহার দেওয়া আদৌ সম্ভব হ’ত না। আল্লাহ তাদের সকল শুভ প্রচেষ্টায় বরকত দান করুন!

এই গ্রন্থ রচনায়, পরিমার্জনায় ও প্রকাশনায় যারা আন্তরিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন, তাদের সকলের প্রতি রইল আমাদের প্রাণখোলা দো‘আ ও সর্বোচ্চ শুকরিয়া। বিশেষ করে এই গ্রন্থের পাতায় পাতায় যার মেহনত জড়িত, সে হ’ল ইন্টারনেট চালনায় দক্ষ আমাদের ২য় পুত্র। বর্তমানে সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শায়খ আলবানী (রহঃ)-এর উপর এম.ফিল (বর্তমানে পিএইচ.ডি) গবেষণায় রত। ইন্টারনেট জগতের অথৈ সাগর থেকে যদি সে অজানা তথ্য ও কিতাবাদি বের করে না আনত এবং নিজে গভীর রাত পর্যন্ত আমাকে গবেষণায় সাহায্য না করত, তাহ’লে এই অমূল্য গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশনা কোনটাই সম্ভব হ’ত কি-না সন্দেহ। আল্লাহ আমাদের সন্তানদেরকে মেধায়, স্বাস্থ্যে, দৃঢ় আক্বীদায় ও নেক আমলে বরকত দিন এবং তাদেরকে ইহকালে ও পরকালে সম্মানিত জীবন দান করুন- আমীন! ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন’ গবেষণা বিভাগের সকলকে এবং যারা যেভাবেই এ মহতী কাজে সহযোগিতা করেছেন, সকলকে আল্লাহ উত্তম পারিতোষিক দান করুন! পরবর্তীতে যারা এই গ্রন্থ ও এর বিষয়বস্ত্তকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিবেন, তিনি ইলম প্রচার ও প্রসারের সর্বোচ্চ নেকী লাভে ধন্য হবেন।

এ যাবত আরবী, উর্দূ ও বাংলা ভাষায় নবীজীবনের উপরে প্রাচীন ও আধুনিক যত শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যা আমাদের সংগ্রহে আছে এবং ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করেছি, সবগুলির মধ্যে যেগুলি প্রসিদ্ধ ও বড় ধরনের ভুল, সেগুলি আমরা মূল বইয়ে অথবা টীকাতে উল্লেখ করেছি। এছাড়াও নতুন অনেক তথ্যাবলী সংযোজিত হয়েছে, যেগুলি বিগত সমালোচক ও টীকাকারগণের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। ফলে গ্রন্থটি যথাসম্ভব বিশুদ্ধ ও সমৃদ্ধ হয়েছে। এরপরেও আমাদের ভুল থাকবে। যা পরবর্তী গবেষকদের জন্য রেখে গেলাম। অনিচ্ছাকৃত সকল ভুলের জন্য আমরা সর্বদা ক্ষমাপ্রার্থী।

এ গ্রন্থ রচনায় আমাদের কোন অহংকার নেই। এটা আল্লাহ তার এক মিসকীন বান্দাকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন মাত্র। এজন্য সকল প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা কেবল তাঁরই জন্য। তিনিই আমাদেরকে ব্যস্ত জীবনের কোলাহল থেকে বের করে নিয়ে কারাগারের নিঃসঙ্গ ফাঁসির সেলে নিরিবিলি গবেষণার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং কষ্টকর জীবনে অভ্যস্ত করিয়েছেন। তিনিই আমাদের জন্য কিছু নিরহংকার আল্লাহভীরু সাথীকে সহযোগী হিসাবে বাছাই করে দিয়েছেন। তিনিই এ বয়স পর্যন্ত আমাদের মেধা ও স্বাস্থ্য অটুট রেখেছেন ও তাঁর পথে দৃঢ় রেখেছেন। ফালিল্লাহিল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়েবাম মুবারাকান ফীহ।

পরিশেষে দীন লেখক সর্বদা দ্বীনদার পাঠকের দো‘আর ভিখারী। তাই নবীদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলছি, ‘হে আমার জাতি! এই লেখনীর বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোন মাল-দৌলত বা কোন বিনিময় চাইনা। আমার পুরস্কার তো কেবল বিশ্বপালক আল্লাহর নিকটেই রয়েছে’ (হূদ ১১/২৯; ইউনুস ১০/৭২; শু‘আরা ২৬/১০৯)।

[1]. নাসাঈ হা/৩১৪০; ছহীহাহ হা/৫২।

[2]. আহমাদ হা/২৫৩৪১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৮১১।

[3]. মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আল-‘ঊশান, মা শা-‘আ ওয়া লাম ইয়াছবুত (রিয়াদ : দার ত্বাইয়েবাহ, সাল বিহীন) ‘ভূমিকা’ অংশ; সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৪৮৮-এর আলোচনা, ১৩/১১১২ পৃঃ; ডঃ আকরাম যিয়া উমারী, সীরাহ নববিইয়াহ ছহীহাহ (রিয়াদ, মাকতাবা উবাইকান ১৪৩০ হিঃ/২০০৯ খৃঃ) ১/১৬২ পৃঃ।

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.